
মরুভূমির স্ফুলিঙ্গ
কল্পনা করুন, একটি পৃথিবী যেখানে আকাশের তারারা যুদ্ধের গোপন কথা ফিসফিস করে, আর নীচের বালি প্রাচীন ক্ষোভের প্রতিধ্বনি লুকিয়ে রাখে। মধ্যপ্রাচ্যের হৃদয়ে, যেখানে সূর্য মাটিকে ঝলসে দেয়, তেহরানের আকাশে একটি ড্রোনের গুঞ্জন একটি সংঘাতের জন্ম দিয়েছিল, যা স্বর্গকে কাঁপিয়ে দেবে। এটি কেবল একটি যন্ত্র ছিল না; এটি ছিল একটি বার্তা, একটি চ্যালেঞ্জ, একটি স্ফুলিঙ্গ। ইরান ও ইজরায়েল, দুই পরাক্রান্ত শক্তি, আগুন ও ইস্পাতের নৃত্যে আবদ্ধ, যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এটি শুধু ক্ষেপণাস্ত্র আর ধ্বংসের গল্প নয়—এটি একটি রোমাঞ্চকর কাহিনী, যেখানে রয়েছে কৌশল, সাহস ও ক্ষমতার মূল্য, যেখানে প্রতিটি পছন্দ মরুভূমিকে রক্তে রাঙিয়ে দিতে পারে।
ইরানের শক্তির উত্থান
ইরানের শক্তিশালী হয়ে ওঠা কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; এটি ছিল স্থিতিস্থাপকতা ও কৌশলের এক অসাধারণ নিদর্শন। কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞা, বিচ্ছিন্নতা ও প্রক্সি যুদ্ধ একটি জাতিকে তৈরি করেছে, যা বিপদের মধ্যেও উন্নতি করেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ, ইরান একটি জটিল জোটের জাল বুনেছিল—রাশিয়া অত্যাধুনিক হাইপারসনিক প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিল, চীন তার জ্বালানি পুনর্জাগরণে অর্থায়ন করেছিল, আর হেজবুল্লাহর গেরিলা কৌশল তার অস্ত্রকে আরও ধারালো করেছিল। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, যা একসময় গুজব ছিল, এখন অঞ্চলের উপর ছায়া ফেলে, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত হুমকির সুরে কথা বলে। ইরানের সাইবার যোদ্ধারা শত্রুর গ্রিড অকেজো করেছে, আর তার ড্রোনের ঝাঁক পুরনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এই শক্তি বিনামূল্যে আসেনি—সম্পদ শুকিয়ে গেছে, ভিন্নমত পিষে ফেলা হয়েছে, আর যুব সমাজ স্বাধীনতার জন্য অস্থির। ইরান কি তার আত্মাকে হারাবে, এই ক্ষমতার লড়াইয়ে? আয়াতুল্লাহরা বলেন, না; কিন্তু তেহরানের রাস্তা অন্য কথা ফিসফিস করে।
সংঘাত ও মূল্য
এই যুদ্ধ কেবল সীমান্ত নিয়ে ছিল না; এটি ছিল ব্যক্তিগত। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইজরায়েলের লৌহমুষ্টি—বসতি বিস্তার, নির্বিচারে বিমান হামলা—এমন ক্ষতচিহ্ন রেখেছিল, যা ইরানের ন্যায়সঙ্গত ক্রোধকে উসকে দিয়েছিল। তেহরানের নেতারা নিজেদের প্রতিশোধকারী হিসেবে দেখেছিলেন, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ছিল ফিলিস্তিনি রক্তের বছরের জবাব। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র অন্য গল্প বলছিল। ইজরায়েলের আয়রন ডোম ইরানের শাহাব-৩ এর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল, শহরগুলো কেঁপে উঠেছিল, আর নিরীহ মানুষ মূল্য দিয়েছিল। ইরান তার নৈতিক ভিত্তি হারানোর ঝুঁকিতে ছিল; প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র, যা স্কুল বা হাসপাতালে বিপথগামী হয়েছিল, তার কারণকে ক্ষুণ্ণ করছিল। ইজরায়েল, এদিকে, একটি বিভক্ত জোটের মুখোমুখি হয়েছিল—তার মিত্ররা টলমল করছিল, বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ বাড়ছিল। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে, একজন বিদ্রোহী ইরানি হ্যাকার, রেজা, এবং একজন ইজরায়েলি পাইলট, মিরিয়াম, অসম্ভব মিত্র হয়ে উঠেছিলেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে এমন গোপন তথ্য ফাঁস করার জন্য দৌড়াচ্ছিলেন। মরুভূমি ও ডিজিটাল ছায়ার মধ্য দিয়ে তাদের যাত্রা একটি সত্য উন্মোচন করেছিল: ক্ষমতা অন্ধ করে, কিন্তু মানবতা একত্রিত করে।
ইরানের ন্যায্য লড়াই?
ইজরায়েলের অধিকৃত অঞ্চলে কর্মকাণ্ড—ধ্বংস, অবরোধ, এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ হামলা—অত্যাচারের একটি অন্ধকার চিত্র এঁকেছিল, যা ইরানের দৃঢ় সংকল্পকে উজ্জীবিত করেছিল। তেহরানের নেতারা তাদের লড়াইকে নিপীড়িতদের জন্য ন্যায় হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন, পশ্চিমা শক্তির সমর্থনপুষ্ট শত্রুর বিরুদ্ধে একটি অবস্থান। তবুও, নাগরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে রক্ষাকারী ও আক্রমণকারীর মধ্যে রেখা ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। ইরান কি আঘাত করতে ঠিক করেছিল? হৃদয় বলে হ্যাঁ, মাথা সতর্ক করে অবিরাম চক্রের কথা। সময়, এবং সম্ভবত রেজা ও মিরিয়ামের সাহসী পদক্ষেপ, বলবে যে প্রতিশোধ কি শান্তি জন্ম দিতে পারে।